নবম শ্রেণির সপ্তম অধ্যায় 'জাতিসংঘ এবং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ' থেকে দ্বিতীয় পার্টের ২ মার্কের প্রশ্নগুলি নীচে তুলে ধরা হল -
১. 'লিগ কভেনান্ট' বলতে কি বোঝ?
উত্তর ঃ ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে প্যারিস শান্তি সম্মেলনে মার্কিন রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসনের সভাপতিত্বে ফেব্রুয়ারি মাসে জাতিসংঘের একটি খসড়া সংবিধান রচনা করা হয়, যা 'লিগ কভানান্ট' নামে পরিচিত। এটিকে 'লিগের গঠনতন্ত্র' বা 'লিগের চুক্তিপত্র'-ও বলা হয়ে থাকে।
২. জাতিসংঘের দুটি সহযোগী সংস্থার নাম লেখ।
উত্তর ঃ লিগ পরিষদ ও সচিবালয়।
৩. লিগ পরিষদে কতজন সদস্য দেশ ছিল?
উত্তর ঃ প্রতিষ্ঠাকালে জাতিসংঘে ৫ টি স্থায়ী সদস্য দেশ ছিল এবং ৪ টি অস্থায়ী দেশ ছিল। এই ৫ টি সদস্য দেশ হল ইংল্যান্ড, জাপান, আমেরিকা, ইতালি ও ফ্রান্স। কিন্তু আমেরিকা শেষপর্যন্ত না থাকায় স্থায়ী দেশের সংখ্যা ৪ টি হয়ে যায়। কিন্তু পরবর্তীকালে রাশিয়া এবং জার্মানি স্থায়ী সদস্য রুপে লিগে যোগদান করে।
৪. জাতিসংঘের লিগ পরিসদের কাজ উল্লেখ করো।
উত্তর ঃ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা এবং তার নিষ্পত্তি করা। যুদ্ধ বন্ধ করার প্রচেষ্টা করা। সমস্যা সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত করা প্রভৃতি।
৫. জাতিসংঘের সচিবালয়ের কাজ উল্লেখ করো।
উত্তর ঃ সাধারণ সভার জন্য তথ্য সংগ্রহ। মূল্যবান তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা।
৬. 'লিগ অব নেশনস' -এর অঙ্গগুলি কি কি ছিল?
উত্তর ঃ সাধারণ সভা, লিগ পরিষদ, সচিবালয়, আন্তর্জাতিক বিচারালয় এবং আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংস্থা।
৭. আন্তর্জাতিক বিচারালয় সম্পর্কে কি জান?
উত্তর ঃ আন্তর্জাতিক বিচারালয় ১৫ জন বিচারপতি নিয়ে গঠিত। এই সব বিচারপতিরা ৯ বছরের জন্য নির্বাচিত হতেন। বিচারপতিদের নিযুক্ত করত জাতিপুঞ্জের সাধারণ সভা এবং নিরাপত্তা পরিষদ। বিচারালয়ের কাজ ছিল আন্তর্জাতিক আইনের ব্যাখ্যা দাওয়া। আন্তর্জাতিক বিরোধের সমাধান করা। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিচারালয়টি নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত।
৮. লন্ডন ঘোষণাপত্র বলতে কি বোঝ?
উত্তর ঃ ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের জুন মাস নাগাদ অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিগণ লন্ডন শহরে মিলিত হয়ে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন যা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সংগঠন গঠন করার প্রস্তাব দেয়। এটিকে লন্ডন ঘোষণাপত্র বলা হয়।
৯. ওয়াশিংটন সম্মেলন কবে ডাকা হয়? কোন কোন দেশ এতে স্বাক্ষর করে?
উত্তর ঃ ১৯৪২ সালের ১ জানুয়ারি এই সম্মেলন ডাকা হয়। এই সম্মেলনে আমেরিকা, রাশিয়া, ইংল্যান্ড সহ মোট ২৬ টি দেশ রাষ্ট্রসংঘের ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করে।
১০. আটলান্টিক চার্টার বলতে কি বোঝ?
উত্তর ঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৪১ সালের ৯ আগস্ট মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টিন চার্চিল আটলান্টিক মহাসাগরে 'প্রিন্স অব ওয়েলস' নামক একটি জাহাজে গোপন বৈঠক করেন। বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধ শেষে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা করা এবং জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণের জন্য তৎপর হওয়া। এই জন্য তারা একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেন, যা আটলান্টিক চার্টার বা আটলান্টিক সনদ নামে পরিচিত।
১১. মস্কো সম্মেলন কবে হয়েছিল? এই সম্মেলনে কোন কোন দেশ যোগদান করেছিল?
উত্তর ঃ ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে এই সম্মেলন হয়েছিল। এই সম্মেলনে আমেরিকা, ব্রিটেন, চীন এবং রাশিয়া যোগদান করেছিল।
১২. রাষ্ট্রসংঘের ঘোষণাপত্র বলতে কি বোঝ?
উত্তর ঃ ১ জানুয়ারি ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দ, আমেরিকা, ব্রিটেন, চীন ও রাশিয়া-সহ বিশ্বের মোট ২৬ টি দেশ আমেরিকার ওয়াশিংটন শহরে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আটলান্টিক চার্টারে স্বাক্ষর করে। এটিকেই রাষ্ট্রসংঘের ঘোষণাপত্র বলা হয়।
১৩. জাতিপুঞ্জের প্রতিষ্ঠায় ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের সানফ্রান্সিসকো সম্মেলনের ভূমিকা কি ছিল?
উত্তর ঃ ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ২৫ এপ্রিল থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত আমেরিকার সানফ্রান্সিসকো শহরে বিশ্বের ৫০ টি দেশের প্রতিনিধিগণ জাতিপুঞ্জের নীতি, উদ্দেশ্য ও গঠনতন্ত্র সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং ২৬ জুন আলোচনা শেষে ৫১ টি দেশ এই জাতিপুঞ্জের সনদে স্বাক্ষর করেন।
১৪. কবে জাতিপুঞ্জ দিবস পালন করা হয়?
উত্তর ঃ ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ২৪ অক্টোবর সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ গঠিত হয়েছিল। ওই দিনটিকে স্মরণ করার জন্য প্রতিবছর ২৪ অক্টোবর জাতিপুঞ্জ দিবস পালন করা হয়।
১৫. জাতিসংঘ এবং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের প্রথম মহাসচিব কে ছিলেন?
উত্তর ঃ জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব ছিলেন স্যার এরিক ড্রুমন্ড এবং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের প্রথম মহাসচিব ছিলেন ট্রিগভি লি।
১৬. জাতিপুঞ্জের প্রধান সাফল্য কি ছিল?
উত্তর ঃ (ক) ১৯৪৬ সালে শান্তিপূর্ণভাবে ইরান থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার করা। (খ) ১৯৫৩ সালে উত্তর কোরিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। (গ) ১৯৫০ সালে হল্যান্ডকে প্রতিহত করার মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতার লাভ। (ঘ) ১৯৫৫ সালে সুয়েজ খালকে কেন্দ্র করে মিশরে ছড়িয়ে পড়া অশান্তি দুর করা।
১৭. জাতিপুঞ্জের ব্যর্থতার কয়েকটি কারণ লেখ।
উত্তর ঃ (ক) জাতিপুঞ্জের স্থায়ী সদস্যদের 'ভেটো' প্রয়োগ। (খ) জাতিপুঞ্জের কোন নিজস্ব সেনাবাহিনী নাই। (গ) আমেরিকার আগ্রাসী মনোভাব প্রভৃতি।
আরও পড়ুন ঃ
১. নবম শ্রেণির ইতিহাস - সপ্তম অধ্যায় - ২ মার্ক - পার্ট ১
24mcq
0 Comments