দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস ꘡ সপ্তম অধ্যায় ꘡ ঠাণ্ডা লড়াইয়ের যুগ ꘡ পার্ট ২

প্রিয় বন্ধুরা, সকলকে আমার ওয়েবসাইটে স্বাগত, আজ আমি তোমাদের সাথে শেয়ার করব দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের সপ্তম অধ্যায় 'ঠাণ্ডা লড়াইয়ের যুগ' -এর দ্বিতীয় পার্টের অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলি -   

১. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে আমেরিকার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা কয়েকটি শক্তিজোটের নাম লেখ।

উত্তর ঃ (ক) 'উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা' বা 'ন্যাটো' (NATO) । এটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৯৪৯ সালে।  (খ) 'দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া চুক্তি সংস্থা' বা 'সিয়াটো' (SEATO) । এটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৯৫৪ সালে।  (গ) 'মধ্য এশিয়া চুক্তি' বা 'সেনটো' (CENTO) । এটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৯৫৫ সালে। 

২. ন্যাটো  (NATO) বলতে কি বোঝ?

উত্তর ঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সমাজতান্ত্রিক রুশ আগ্রাসন প্রতিহত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার অনুগামী কিছু দেশের মধ্যে আমেরিকার ওয়াশিংটনে একটি সামরিক জোট গড়ে ওঠে ১৯৪৯ সালের ৪ এপ্রিল, একেই 'উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা' বা ন্যাটো বলা হয়। যার নেতৃত্বে ছিল আমেরিকা। আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইতালি, কানাডা সহ আরও ১২ টি দেশ সৃষ্টির সময়ে ন্যাটোর সদস্য ছিল। 

৩. ন্যাটো  (NATO) কবে গঠন করা হয়েছিল?

উত্তর ঃ ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ৪ এপ্রিল।

৪. ন্যাটো  (NATO) -এর পুরো কথা লেখ।

উত্তর ঃ  NATO -এর পুরো কথা হল  - North Atlantic Treaty Organisation .

৫. ম্যানিলা চুক্তি বা সিয়াটো (SEATO) কী?

উত্তর ঃ  দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সাম্যবাদ প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, থাইল্যান্ড ও ফিলিপিন্সের মধ্যে ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের ৮ সেপ্টেম্বর যে সামরিক চুক্তি হয়েছিল, তা ম্যানিলা চুক্তি নামে পরিচিত। ম্যানিলা চুক্তিকেই পরবর্তীতে  সিয়াটো (SEATO) বলা হয়।

৬.  সিয়াটো (SEATO) গঠনের উদ্দেশ্য কি ছিল?

উত্তর ঃ চীনকে প্রতিরোধ করা এবং চিনের কমিউনিস্ট আক্রমণ থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, থাইল্যান্ড ও ফিলিপিন্সের মধ্যে এই চুক্তি গড়ে উঠেছিল। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করাই ছিল আমেরিকার উদ্দেশ্য। যার জন্য আমেরিকা এই পথটি বেছে নিয়েছিল।

৭. সেনটো (CENTO) বলতে কি বোঝ?

উত্তর ঃ মধ্যপ্রাচ্য হল তেল সম্পদের একটি বিরাট উৎস। তাই এই মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বিস্তার করা এবং এই অঞ্চলে রাশিয়ার প্রভাব কম করার জন্য আমেরিকা, ব্রিটেন, ইরাক, ইরান, পাকিস্তান ও তুরস্ককে নিয়ে গঠিত হয়েছিল 'মেডো' (MEDO) নামে একটি সংস্থা। যার পুরো কথা হল Middle East Defence Organisation. এটির আরেক নাম বাগদাদ চুক্তি। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে ইরাক এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় তখন এই চুক্তির নাম করা হয় 'সেন্টো' (Central Treaty Organisation) বা CENTO. ইরাক বেরিয়ে যাবার পর এই সংস্থার সদর দপ্তর বাগদাদ থেকে আংকারা-তে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। 

৮. আনজাস বলতে কি বোঝ?

উত্তর ঃ আনজাস (ANZUS) এমন একটি সামরিক চুক্তি যেখানে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলে সাম্যবাদী শক্তিকে আটকাতে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড-এর সাথে স্বাক্ষর করে। এই চুক্তি হয়েছিল ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে। 

৯. কবে এবং কাদের মধ্যে আনজাস (ANZUS) চুক্তি  স্বাক্ষরিত হয়েছিল?

উত্তর ঃ ১৯৫১ সালে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে আনজাস (ANZUS) নামক সামরিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

১০. 'কমিনফর্ম' (COMINFORM) কবে গঠিত হয়েছিল?

উত্তর ঃ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭ সালে কমিনফর্ম গঠিত হয়েছিল।

১১. কমিনফর্ম (COMINFORM) বলতে কি বোঝ?

উত্তর ঃ ইউরোপে যখন আমেরিকা কমিউনিস্ট বিরোধী প্রয়াস চালাচ্ছে তখন সোভিয়েত রাশিয়া আমেরিকার এই প্রয়াসকে বিফল করতে রাশিয়া তার অনুগামী রাষ্ট্র যেমন রোমানিয়া, পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ার মতো সাম্যবাদী দেশগুলিকে নিয়ে ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কমিনফর্ম গঠন করে। যার পুরো কথা হল Communist Information Bureau. এর সদর দপ্তর বেলগ্রেড-এ অবস্থিত। 

১২. কমিনফর্ম গঠনের উদ্দেশ্য লেখ।

উত্তর ঃ পূর্ব ইউরোপে সাম্যবাদের প্রসার এবং তাকে নিয়ন্ত্রিত করা, কমিউনিস্ট কার্যকলাপের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা এবং আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্যই কমিনফর্ম গঠন করা হয়েছিল। 

১৩. কমিনফর্ম-এর অন্তর্ভুক্ত দুটি দেশের নাম উল্লেখ করো।

উত্তর ঃ পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়া। এছাড়া রোমানিয়াও এর সদস্য। 

১৪. COMECON -এর পুরো নাম কি?

উত্তর ঃ COMECON -এর পুরো কথা হল - Council for Mutual Economic Assistance.

১৫. 'কমেকন'  (COMECON) বলতে কি বোঝ?

উত্তর ঃ জর্জ সি মার্শাল ঘোষিত মার্শাল পরিকল্পনার জবাব দিতে সোভিয়েত রাশিয়া পূর্ব ইউরোপের কিছু সাম্যবাদী দেশ যেমন - পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়া, রোমানিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া, পূর্ব জার্মানি ও আলবেনিয়াকে নিয়ে ১৯৪৯ সালের জানুয়ারি মাসে COMECON বা 'পারস্পারিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা' গঠন করে। এর উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধের ফলে ধ্বংস হওয়া ইউরোপের অর্থনীতির পুনঃজাগরণ ঘটানো। 

১৬. ওয়ারশ চুক্তি কবে হয়েছিল? এর উদ্দেশ্য কি ছিল?

উত্তর ঃ ১৪ মে, ১৯৫৫ সালে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এর নেতৃত্ব দিয়েছিল সোভিয়েত রাশিয়া। এর উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব ইউরোপে কমিউনিস্ট নিরাপত্তা সুদৃঢ় করা এবং ন্যাটো, সিয়েটো সহ অন্যান্য মার্কিন মদতপুষ্ট সংস্থা গুলির প্রত্যুত্তরে একটি বিরোধী সংস্থা তৈরি করা।

১৭. কোন কোন দেশ ওয়ারশ চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল?

উত্তর ঃ সোভিয়েত রাশিয়া, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, আলবেনিয়া, পূর্ব জার্মানি, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, চীন এবং চেকোস্লোভাকিয়া। 

১৮. এশিয়া মহাদেশের কোন দেশ ওয়ারশ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল?

উত্তর ঃ চীন। 

24mcq

আরও পড়ুন ঃ 

১. দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস ꘡ সপ্তম অধ্যায় ꘡ ঠাণ্ডা লড়াইয়ের যুগ ꘡ পার্ট ১

Post a Comment

0 Comments