১. মধ্যবিত্ত শ্রেণি বলতে কি বোঝ?
উত্তর ঃ সমাজের যে শ্রেণির অবস্থান উচ্চবিত্ত শ্রেণি এবং কায়িক শ্রমজীবীর মানুষদের মাঝে থাকত মূলত সেই শ্রেণির মানুষদেরকেই মধ্যবিত্ত বলা হত। যদি অন্য ভাবে বলি তো এমন হয়, মধ্যবিত্ত বলতে বোঝায় এমন এক সামাজিক গোষ্ঠী যারা শিক্ষাদীক্ষা, রুচি, মানসিকতা এবং মননশীলতার দিক থেকে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। মধ্যবিত্ত শ্রেণি যাকে ইংরেজিতে বলা হয় 'Middle Class'.
২. কে, কবে এবং কি উদ্দেশ্যে কলকাতা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?
উত্তর ঃ আরবি-ফারসি ভাষা, ইসলামিক আইনকানুন প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষাদানের জন্য বড়োলাট ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
৩. এশিয়াটিক সোসাইটি কে, কবে এবং কি উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?
উত্তর ঃ ভারতের প্রাচীন ইতিহাস, সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, শিল্পকলা প্রভৃতি বিষয়ে গবেষণা এবং প্রাচীন ভারতের ঐতিহ্য সম্পর্কে জ্ঞানের প্রসার ঘটানোর জন্যই কলকাতা সুপ্রিমকোর্টের অন্যতম বিচারপতি স্যার উইলিয়াম জোন্স ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
৪. শ্রীরামপুর ব্যাপটিস্ট মিশন কবে, কাদের উদ্যোগে গঠিত হয়েছিল?
উত্তর ঃ তিনজন খ্রিস্টান মিশনারি যাদের নাম উইলিয়াম কেরি, জোশুয়া মার্শম্যান এবং উইলিয়াম ওয়ার্ড -এর উদ্যোগে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুরে ব্যাপটিস্ট মিশন গঠিত হয়েছিল।
৫. শ্রীরামপুর ত্রয়ী কাদের বলে?
উত্তর ঃ উইলিয়াম কেরি, জোশুয়া মার্শম্যান এবং উইলিয়াম ওয়ার্ডকে একত্রে শ্রীরামপুর ত্রয়ী বলা হয়।
৬. কে, কবে জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?
উত্তর ঃ ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে আলেকজান্ডার ডাফ।
৭. জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন -এর বর্তমান নাম কি?
উত্তর ঃ স্কটিশ চার্চ কলেজ।
৮. আলেকজান্ডার ডাফ বিখ্যাত কেন? বা, আলেকজান্ডার ডাফ কে ছিলেন?
উত্তর ঃ আলেকজান্ডার ডাফ ছিলেন একজন স্কটিশ মিশনারি, যিনি শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে অনেকগুলি ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন নামক ইংরেজি বিদ্যালয়টি। তিনি উচ্চবর্ণের হিন্দুদের মধ্যে শিক্ষার বিস্তার ঘটাতে বেশি আগ্রহী ছিলেন নিন্মবর্ণের মানুষদের তুলনায়।
৯. কোন সময়কে 'ডাফের যুগ' বলা হয়?
উত্তর ঃ ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালকে 'ডাফের যুগ' বলা হয়।
১০. কবে কার উদ্যোগে এবং কোথায় 'অ্যাংলো-হিন্দু স্কুল' স্থাপিত হয়েছিল?
উত্তর ঃ ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে রাজা রামমোহন রায়ের উদ্যোগে কলকাতায় 'অ্যাংলো-হিন্দু স্কুল' স্থাপিত হয়েছিল।
১১. কবে, কাদের উদ্যোগে 'হিন্দু কলেজ' স্থাপিত হয়েছিল?
উত্তর ঃ ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে রাজা রামমোহন রায়ের উৎসাহে ডেভিড হেয়ার, রাধাকান্ত দেব, বৈদ্যনাথ মুখোপাধ্যায়, স্যার হাইড ইস্ট প্রমুখের উদ্যোগে কলকাতায় 'হিন্দু কলেজ' স্থাপিত হয়েছিল।
১২. কে, কবে পটলডাঙা অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?
উত্তর ঃ 'প্রিপারেটারি স্কুল' বা 'পটলডাঙা অ্যাকাডেমি' প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ডেভিড হেয়ার ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে। ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে এর নাম হয় 'হেয়ার স্কুল'।
১৩. General Committee of Public Instruction কে গঠন করেছিলেন/
উত্তর ঃ লর্ড আমহার্স্ট।
১৪. প্রাচ্যবাদী কাদের বলা হয়?
উত্তর ঃ লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক-এর শাসনকালে কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকশনের যেসমস্ত সদস্যরা ভারতে প্রাচ্য রীতিতে শিক্ষাদানের পক্ষপাতী ছিলেন তাদের প্রাচ্যবাদী বলা হয়।
১৫. পাশ্চাত্যবাদী কাদের বলা হয়?
উত্তর ঃ লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক-এর শাসনকালে কমিটি অব পাবলিক ইন্সট্রাকশনের যেসমস্ত সদস্যরা ভারতে পাশ্চাত্যরীতিতে শিক্ষাদানের পক্ষপাতী ছিলেন তাদের পাশ্চাত্যবাদী বলা হয়।
১৬. কয়েকজন প্রাচ্যবাদীর নাম লেখ।
উত্তর ঃ কয়েকজন প্রাচ্যবাদীর নাম হল এইচ টি প্রিন্সেপ, কোলব্রুক, উইলসন প্রমুখ।
১৭. কয়েকজন পাশ্চাত্য বাদীর নাম লেখ।
উত্তর ঃ কয়েকজন পাশ্চাত্যবাদীর নাম হল লর্ড মেকলে, কেলভিন, আলেকজান্ডার ডাফ, সান্ডার্স প্রমুখ।
১৮. মেকলে কে ছিলেন?
উত্তর ঃ বড়োলাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক -এর শিক্ষাসচিব ছিলেন মেকলে। ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারে তার মেকলে মিনিটের ভূমিকা রয়েছে।
১৯. মেকলে মিনিট বলতে কি বোঝ?
উত্তর ঃ লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক -এর শিক্ষাসচিব মেকলে ভারতে প্রাচ্য শিক্ষার অবৈজ্ঞানিক ও নিকৃষ্টতার প্রেক্ষাপটে এবং পাশ্চাত্য শিক্ষার উৎকৃষ্টতার পক্ষে অভিমত দিয়ে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি একটি প্রতিবেদন বড়োলাটের কাছে পেশ করেন, যা মেকলে মিনিট নামে পরিচিত।
২০. চুঁইয়ে পড়া নীতি কি?
উত্তর ঃ লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক -এর আইনসচিব, শিক্ষাসচিব এবং একজন বিখ্যাত সাহিত্যিক ও চিন্তাবিদ ছিলেন মেকলে। তিনি তার প্রতিবেদন বা 'মিনিটস'-এ বলেন যে প্রথমে সমাজের উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্তদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটালে ধীরে ধীরে তা সমাজের নিন্মবিত্ত এবং অতি সাধারণ মানুষদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। মেকলের এই নীতি চুঁইয়ে পড়া নীতি নামে পরিচিত। এই নীতিকে 'ফিল্ট্রেশন তত্ত্ব' বা 'ক্রমনিন্ম পরিশ্রুত নীতি' -ও বলা হয়।
২১. প্রাচ্য-পাশ্চাত্য দ্বন্দ্ব বলতে কি বোঝ?
উত্তর ঃ ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের সনদ আইনে নির্দেশ দেওয়া হয় যে ভারতীয়দের শিক্ষার জন্য প্রতিবছর ১ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হবে। কিন্তু এই টাকা কীভাবে ব্যয় করা হবে তা নিয়ে জেমস প্রিন্সেপ, কোলব্রুক প্রমুখ প্রাচ্যবাদী এবং ট্রেভেলিয়ান, কেলভিন প্রমুখ পাশ্চাত্যবাদীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলতে থাকে, যা 'প্রাচ্য-পাশ্চাত্য দ্বন্দ্ব' নামে পরিচিত।
২২. কোন গভর্নর জেনারেল 'প্রাচ্য-পাশ্চাত্য দ্বন্দ্ব' বা 'অ্যাংলিসিস্ট-ওরিয়েন্টালিস্ট বিতর্ক'-এর অবসান ঘটান?
উত্তর ঃ ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ৭ মার্চ গভর্নর জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক ইংরেজি শিক্ষার প্রসারকে সরকারি নীতি হিসাবে ঘোষণা করেন। যার ফলে 'প্রাচ্য-পাশ্চাত্য দ্বন্দ্ব' বা 'অ্যাংলিসিস্ট-ওরিয়েন্টালিস্ট বিতর্ক'-এর অবসান ঘটে।
আরও পড়ুন ঃ
১. দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস꘡চতুর্থ অধ্যায়꘡সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া꘡পার্ট ২
২. দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস꘡চতুর্থ অধ্যায়꘡সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া꘡পার্ট ৩
৩. দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস꘡চতুর্থ অধ্যায়꘡সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া꘡পার্ট ৪
৪. দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস꘡চতুর্থ অধ্যায়꘡সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া꘡পার্ট ৫
৫. দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস꘡চতুর্থ অধ্যায়꘡সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া꘡পার্ট ৬
24mcq
0 Comments