১. চার্লস উড কে ছিলেন?
উত্তর ঃ স্যার চার্লস উড ছিলেন বোর্ড অব কন্ট্রোলের সভাপতি। তিনি ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষা সংক্রান্ত একটি নির্দেশনামা জারি করেছিলেন যা, 'উডের ডেসপ্যাচ' নামে পরিচিত।
২. উডের ডেসপ্যাচ বা উডের নির্দেশনামা বলতে কি বোঝ?
উত্তর ঃ ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে বোর্ড অব কন্ট্রোলের সভাপতি স্যার চার্লস উড ভারতে শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিয়মবদ্ধ করা এবং সুসংহত করার জন্য একটি নির্দেশনামা জারি করেছিলেন, যা 'উডের ডেসপ্যাচ' নামে পরিচিত। এতে তিনি সরকারি উদ্যোগে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, স্বতন্ত্র শিক্ষাবিভাগ তৈরি করা, নারীশিক্ষার প্রসার, মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের কথা ইত্যাদি বলেছিলেন।
৩. ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ভারতে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছিল?
উত্তর ঃ কলকাতা, বোম্বাই এবং মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছিল। এগুলি মূলত উডের ডেসপ্যাচের ভিত্তিতে স্থাপিত হয়েছিল।
৪. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য কে ছিলেন?
উত্তর ঃ জেমস উইলিয়াম কোলভিল।
৫. হান্টার কমিশনের সুপারিশ কবে প্রকাশিত হয়েছিল?
উত্তর ঃ ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে।
৬. কবে, কেন স্যাডলার কমিশন গঠিত হয়েছিল?
উত্তর ঃ ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তার এবং উচ্চশিক্ষার উন্নতির উদ্দেশ্যে ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে স্যার মাইকেল স্যাডলারের নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠিত হয়েছিল, যার নাম স্যাডলার কমিশন।
৭. স্যাডলার কমিশনের দুজন ভারতীয় সদস্যের নাম লেখ।
উত্তর ঃ আশুতোষ মুখার্জি এবং ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ।
৮. 'আত্মীয় সভা' কে, কবে এবং কি উদ্দেশ্যে গঠন করেছিলেন?
উত্তর ঃ ধর্মীয় এবং সামাজিক সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে ভারত পথিক রাজা রামমোহন রায় কলকাতায় 'আত্মীয় সভা' স্থাপন করেছিলেন। সমাজে প্রচলিত ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কার ইত্যাদি দুর করা এবং অলৌকিকত্ব বিরোধী ও একেশ্বরবাদী ধর্মমত সম্পর্কে গড়ে তোলাই ছিল এই সভা প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্দেশ্য।
৯. কে, কি উদ্দেশ্যে ব্রাহ্মস্মাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?
উত্তর ঃ ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজা রামমোহন রায়। মূলত একেশ্বরবাদী আদর্শ প্রচার করার জন্যই তিনি ব্রাহ্মসমাজ স্থাপন করেছিলেন। এছাড়াও ব্রাহ্মসমাজের অন্যান্য উদ্দেশ্য ছিল নারীমুক্তি আন্দোলন, কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলন, শিক্ষাবিস্তার এবং সমাজসেবা ইত্যাদি ইত্যাদি।
১০. কে, কবে সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ করেছিলেন?
উত্তর ঃ রাজা রামমোহন রায় সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে বিভিন্ন নিবন্ধ, রচনা ইত্যাদি প্রকাশ করার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন ধর্মশাস্ত্র থেকে বিভিন্ন যুক্তি দেখিয়ে জনমত গঠন করেছিলেন। অবশেষে ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দের ৪ ডিসেম্বর বিশিষ্টজনের সহায়তায় উদারচেতা গভর্নর লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক সপ্তদশ বিধি আইনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে সতীদাহ প্রথা রদ করেছিলেন।
১১. কাকে এবং কেন বাংলা গদ্য সাহিত্যের জনক বলে?
উত্তর ঃ একেশ্বরবাদ এবং ধর্মসংস্কারের উদ্দেশ্যে রাজা রামমোহন রায় অনেক বই এবং উপনিষদের বাংলা অনুবাদ করেছিলেন। এর ফলে বাংলা গদ্য সাহিত্যের প্রভুত বিকাশ ঘটে। এসবের জন্যই রাজা রামমোহন রায়কে বাংলা গদ্য সাহিত্যের জনক বলা হয়।
১২. 'ভারতীয় সাংবাদিকতার অগ্রদূত' কাকে বলা হয়? তাঁকে 'ভারতীয় সাংবাদিকতার অগ্রদূত কে বলেছিলেন?
উত্তর ঃ সংবাদপত্রের স্বাধীনতার সপক্ষে রাজা রামমোহন রায় যে সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন, তার জন্য তাঁকে 'ভারতীয় সাংবাদিকতার অগ্রদূত' বলা হয়। রাজা রামমোহন রায়কে 'ভারতীয় সাংবাদিকতার অগ্রদূত বলেছিলেন ড. বিপানচন্দ্র।
১৩. রাজা রামমোহন রায় প্রকাশিত দুটি সংবাদপত্রের নাম উল্লেখ করো।
উত্তর ঃ বাংলা ভাষায় প্রকাশিত 'সম্বাদ কৌমুদী' (১৮২১) এবং ফরাসি ভাষায় প্রকাশিত 'মিরাৎ-উল-আকবর' (১৮২২)।
১৪. 'একেশ্বরবাদ' সম্পর্কে রাজা রামমোহন রায়ের লেখা একটি গ্রন্থের নাম উল্লেখ করো।
উত্তর ঃ তুহাফৎ-উল-মুয়াহিদ্দিন।
১৫. কে, কাকে এবং কেন 'ব্রহ্মানন্দ' উপাধি দিয়েছিলেন?
উত্তর ঃ পাণ্ডিত্য, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী কেশবচন্দ্র সেন নারীমুক্তি আন্দোলন, ধর্মপ্রচার ও সমাজসেবার আদর্শে বহু যুবককে আকৃষ্ট করেছিলেন, যার ফলে বহু যুবক দলে দলে ব্রাহ্মসমাজে যোগ দিতে শুরু করে। এই সব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর কেশবচন্দ্র সেনকে 'ব্রহ্মানন্দ' উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন।
১৬. কারা, কবে 'ভারতীয় ব্রাহ্মসমাজ' গঠন করেছিলেন?
উত্তর ঃ ব্রাহ্মসমাজের পরিচিত মুখ কেশবচন্দ্র সেন বিধবাবিবাহ, অসবর্ণ বিবাহ, সংস্কৃতের পরিবর্তে বাংলায় মন্ত্রোচ্চারণ ইত্যাদি প্রগতিশীল কর্মসূচি গ্রহণ করলে ব্রাহ্মসমাজের প্রাচীনপন্থী নেতা (দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর -সহ আরও অনেকে) -রা কেশবচন্দ্র সেনের প্রতিবাদ করেন। যার ফলে কেশবচন্দ্র সেন -সহ তাঁর কিছু অনুগামীকে ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে ব্রাহ্মসমাজ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর তারা 'ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মসমাজ' গঠন করেন।
১৭. 'নববিধান' বলতে কি বোঝ?
উত্তর ঃ ব্রাহ্মসমাজের অন্যতম সদস্য কেশবচন্দ্র সেন ব্রাহ্মসমাজে কিছু নতুন নীতি বা বিধান প্রবর্তন করেছিলেন, যাকে 'নববিধান' বলা হয়।
১৮. 'সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ' কারা গঠন করেছিলেন?
উত্তর ঃ বিভিন্ন কারণে আনন্দমোহন বসু, শিবনাথ শাস্ত্রী, দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ কেশবচন্দ্র সেন প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্মসমাজ থেকে বেরিয়ে আসেন এবং তারা 'সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ' গঠন করেন।
১৯. তিন আইন বলতে কি বোঝ?
উত্তর ঃ ব্রাহ্মসমাজের তীব্র আন্দোলনের ফলাফল স্বরূপ ব্রিটিশ সরকার ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে তিন আইন বা Act III পাশ করেন। এই আইনের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ এবং বহুবিবাহ ইত্যাদি সামাজিক কুসংস্কারগুলিকে নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয় এবং বিধবাবিবাহ, অসবর্ণ বিবাহ ইত্যাদিকে সামাজিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুন ঃ
১. দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস꘡চতুর্থ অধ্যায়꘡সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া꘡পার্ট ১
২. দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস꘡চতুর্থ অধ্যায়꘡সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া꘡পার্ট ৩
৩. দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস꘡চতুর্থ অধ্যায়꘡সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া꘡পার্ট ৪
৪. দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস꘡চতুর্থ অধ্যায়꘡সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া꘡পার্ট ৫
৫. দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস꘡চতুর্থ অধ্যায়꘡সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া꘡পার্ট ৬
0 Comments